জান্নাতের বাগান

গত পরশু রাত তিনটা নাগাদ ঘুম ভেংগে গেলো। আমার দুই রুমমেটের ফোনে দরাজ কণ্ঠে ওয়াজ চলছিল। তাঁরা দুজনই আমার দুই পাশে। ঘুমের ঘোরে আমার কাছে মনে হলো বেহেস্তের বাগানে চলে আসছি। মনে মনে বলতেছি, হায় হায় শেষে কি গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় মরলাম!


যাইহোক, কোনো প্রকার আগুনে না পুড়ে বেহেস্তে চলে আসছি এইটাই স্বস্তি। এরপর মাথায় আসল বেহেস্তী সরাবের কথা। দুনিয়ায় থাকতে এই একটা জিনিসের প্রতিই লোভ ছিলো। আমার খুব আফসোস হইত, বেহেস্তী সরাব হয়ত আমার কপালে নেই। কারণ দুনিয়ায় থাকতে অনেকেই আমাকে জাহান্নামের টিকিট ধরিয়ে দিয়েছিল।

যেভাবেই হোক, বেহেস্তে তো আসছি। এবার সরাব ট্রাই করা যাক। হাক ডাক ছেড়ে সরাব চাইলাম। অন্ধকার থেকে এক ফেরেস্তা জিজ্ঞেস করল, দেশি না ফরেন? আমি একটু অবাক হলাম। বেহেস্তেও এসব আছে না কি! চিন্তা করলাম দুনিয়ায় তো টাকার অভাবে ফরেন খেতে পারিনি। ফরেনই খাওয়া যাক। এরপর ফেরেস্তা বলল, জ্যাক ডেনিয়েল, ভ্যাট সিক্সটি নাইন, হান্ড্রেড পাইপার্স, পাসপোর্ট স্কচ, ভেলেন্টাইন্স, ডিভা ভদকা, টাকিলা, স্যার পিটারসন কোনটা নিবেন?

এবার তো মাথাই কাজ করতেছে না। এইসব ব্রান্ড তো দুনিয়ায় শুনছি। এরা বেহেস্তে কি করে আসলো। টাকা দিয়ে কি বেহেস্তেও আউটলেট বসাইছে না কি! এদিক ওদিক চিন্তা করে বললাম ভেলেন্টাইন্স। ফেরেস্তা বলল, সাত হাজার পাচঁশ টাকা দেন।

এই কথা শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। বললাম, ভোসরিকে ফেরেস্তা এত কষ্ট করে বেহেস্তে আসছি কি টাকা দিয়ে মাল খেতে?

অন্ধকার থেকে ফেরেস্তা জবাব দিল, ভোসরিকে তুমি বেহেস্তে নাই। মাস্টারদা' সূর্যসেন হলের ৩৪১ নম্বর রুমে আছ। আর আমি ফেরেস্তা না, তোমার রুমমেট মেহেদী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আত্মহত্যা

অনিদ্রিতা

প্রাক্তন