পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

পাবলিক বাসে একদিন

দেড় ঘন্টা যাবত থানায় বসে আছি। অফিসার ইন চার্জ থানায় নেই। ডিউটি অফিসার বললো, "ওসি স্যার আসলে কথা বলে তারপর যাবেন।" আমি একা না, সাথে আরেকজন আছেন। তাকে চিনি না, আজকের আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না। ঝামেলাটা তার আর আমার মধ্যেই। শুরু থেকে বলি তাহলে, ঘন্টা দেড়েক টিএসসিতে আড্ডা দেওয়ার পর বাসার উদ্দেশ্যে শাহবাগ আসি। কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর বাস আসলে উঠে পরি। মাঝের সারির একটা সিটে বসি। পাশেই একজন ভদ্রলোক বসেছিলো। বয়স কত হবে ৩০/৩২। দেহের গড়ন বেশ রুষ্টপুষ্ট, উচ্চতায় কম। ভাবছেন এই ভদ্রলোকের বর্ণনা কেন দিচ্ছি? একটু অপেক্ষা করুন, সব টের পাবেন। কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর বাস চলতে শুরু করলো। ঢাকার বাসে ড্রাইভারদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি স্টপেজে না দাঁড়ালে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। তাই তারা প্রতি স্টপেজে এমনকি রাস্তার মাঝখান থেকেও বাসে যাত্রী তুলে। যাগকে সে কথা, ড্রাইভারদের নিয়ে অন্যদিন বলা যাবে। বাস পরীবাগ পাড় হতেই পকেট থেকে মোবাইল বের করলাম। এক ছোটভাইয়ের সাথে কিছু জরুরি কথা ছিলো। ম্যাসেঞ্জার ওপেন করে অনলাইনে পেয়ে মেসেজ লিখা শুরু করলাম। আমার পাশের ভদ্রলোক আমার মোবাইলের স্ক্রিনে অনেকক্ষণ যাবত তাকিয়ে আছে। আ

নিষিদ্ধ পল্লিতে একদিন- ১

হটাৎ পাশের ঘর থেকে কিছুটা চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছিলো, রেইনা বললো, -আপনে বহেন, আমি দেইখা আহি কি হইলো। কিছুক্ষণ বাদে সে ফিরে আসলো, কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই সে বললো -নতুন মাইয়া, আইজকোই পত্থম কামে নামছে। সইহ্য করতে পারে নাই, বেহুশ হইয়া গেছে। বেচারি, পুরা টাহাডাই মাইর। সবারই পত্থম পত্থম এমন সমস্যা হয়। আস্তে আস্তে সব ঠিক হইয়া যায়। -আপনার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো? বলবেন নাকি? -অহন যেই মাইয়ারা আহে ওগো মত আমরা ছিলাম না। আমাগো শরীলে বল আছিলো। আমরা গেরামের তাজা সব্জি, মাছ খাইয়া বড় হইছি। এহনকার মাইয়ারা তো ফর্মালিন দেওয়া জিনিস খাইয়া বড় হয়। শরীলে বল পাইব কইত্থে? এই কাম করতে শরীলে অনেক বল লাগে, আপনেরা বুঝবেন না। পান খাইবেন নি? -আমি পান খাই না। -ও, বিড়ি? -না, আমি সিগারেটও খাই না। -আমনেতো দেহি একেবারে ভদ্দরলোক, পান খান না, বিড়ি খান না, ছেমরি মানুষের নেশাও নাই। -পান, সিগারেট আমি বললাম, কিন্তু মেয়ে মানুষের নেশা নেই কি করে বুঝলেন? -ওমা, বুঝুম না কেন? এই জাগায় আইছেন, খালি লেখালেখি করার লাইজ্ঞা। অন্য কিছুতে তো আমনের নজর দেখলাম না। -আমি নজর দিলেও আপনি বুঝবেন কি করে? -বুঝা যায় মিয়া, কত মানুষ চড়ায়া খাইছি হারা

মতিভ্রম

সারা বিশ্ব মাতিয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। এর প্রভাবে ২০২০ সালের মার্চেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ফলে আবাসিক হলগুলোও বন্ধ হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারে কাছে ছুটে যায়, আমার বেলায়ও ঠিক এমনটাই। তবে আমাকে গ্রামের বাড়ি যেতে হয়নি। বাবা-মা ঢাকায় থাকার দরুন লকডাউনের শুরু থেকেই ঢাকায় ছিলাম। মাঝে এক-দুবার হলে গিয়েছিলাম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ কিছু জামাকাপড় আনতে। কিছুদিন আগে হলের বন্ধু হুমায়ূন কল করে, ওর কিছু বইপত্র ছিলো আমার কাছে, সেগুলো লাগবে। বইগুলো হলে রেখেই চলে এসেছিলাম। আবার হলে যেতে হবে সেগুলো আনতে। তাই আজকে দুপুর দিকটায় বাসা থেকে বের হই হলে যাওয়ার জন্য। হল গেটে এসে মামাদের কাছে হলকার্ড সহ আবেদনপত্র জমা দিয়ে হলে প্রবেশ করি। আমার রুমটা হলের মাঝখানের ব্লকে, ৩৪১ নম্বর রুম। হলের মাঝের ব্লকে থাকায় যেমন বাতাস বয়ে যেত আমার রুম দিয়ে ঠিক তেমনি ধুলোবালিও বয়ে যায়। রুমের তালা খুলতেই ধুলোঝাড়া বাতাস মুখে এসে লাগলো। ভেতরে ঢুকে বইপত্র গুছাতে লাগলাম । বই গুছাতে গুছাতে ভাবতে লাগলাম, কত স্মৃতি আছে এই রুমটায়। রাজনীতি, সুজনের পাগলামী, মেহেদীর থার্ড আই আর ভিডিও চ্যাটে কান্নার অভিনয় আরো কত কত কাহিনী।